এবার প্রথমে ফেসবুকে বন্ধুত্ব, তারপর ভালোলাগা, ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা। কিন্তু কিছুদিন যাবার পর থেকেই শুরু হয় সম্পর্কের টানপোড়ন। ফলে দুজনের মধ্যে দলিল করে চুক্তিনামা করা হয়, তবে শেষমেষ টিকল না সেই চুক্তিও। বাধ্যহয়ে প্রেমিকের বাড়ির সামনে এসে অনশন করছেন প্রেমিকা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
এদিকে তিনশত টাকার দলিলে চুক্তি করেও প্রেম টিকাতে পারলেন না ঢাকার একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করা প্রেমিকা। স্ত্রীর দাবি নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে আসলে সম্পর্ক অস্বীকার করে বলে জানায় ভুক্তভোগী। ফলে গত তিন দিন যাবৎ কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব তারাপাসা এলাকার আজগর আলির ছেলে প্রেমিক আশিকুর রহমান শুভর বাড়ির সামনে এসে অনশন করছেন তিনি।
এদিকে ভুক্তভোগী প্রেমিকা জানান, গত তিন বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র কিশোরগঞ্জের পূর্ব তারাপাসা এলাকার আজগর আলি ধনু ভূঁইয়ার ছেলে আশিকুর রহমান শুভর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে প্রেমিক শুভ বারবার তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করলে মাহী তাকে বিয়ে করতে বলেন। এসব বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় দুজনে মিলে একটি চুক্তি সম্পাদন করেন।
ভুক্তভোগীর দাবি একজন আইনজীবীর মাধ্যমে তিনশত টাকার দলিলে উক্ত চুক্তি সম্পাদন করা হয়। চুক্তিতে উল্লেখ থাকে যে, পাঁচ বছর পর তাদের বিয়ে সম্পন্ন হবে এবং এই সময়ের মধ্যে কেউ কাউকে ছেড়ে যাবে না। এমনকি কেউ মানসিক বা শারীরিক অত্যাচার করবে না। কিন্তু তারপরেও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ও বিভিন্নভাবে ফুঁসলিয়ে তার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে বলে দাবি করে প্রেমিকা।
এরমধ্যে শুভর চাপে একবার গর্ভপাত করেছে বলেও জানান ভুক্তভোগী। পরে শুভকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ একজন মাওলানার মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হয় তাদের। হঠাৎ শুভ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ভুক্তভোগী প্রেমিকা শুভর নিজ বাড়ি কিশোরগঞ্জে আসলে তাকে অস্বীকার করে।
এদিকে ভুক্তভোগী প্রেমিকার আরও দাবি, শুভর আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন সময় তাকে সমাধানের আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। পক্ষান্তরে তাকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন ও ভয় দেখানো হচ্ছে। ফলে তিনি গত ৫ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যে সংশ্লিষ্ট থানা যে এলাকায় ভিকটিমের সাথে এই ঘটনা ঘটেছে ওই থানায় অভিযোগ করে একটি কপি নিয়ে আসলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়টি নিয়ে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। জনপ্রতিনিধি হিসাবে দুই পক্ষসহ এলাকার লোকজন নিয়ে শীঘ্রই বসে এর একটি সঠিক সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব। এ বিষয়ে শুভ ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কেউ বাসা থেকে বের হননি।